ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাহাজের ক্যাপ্টেন ও জলদস্যুর সঙ্গে যোগাযোগ

বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় : ২০-০৩-২০২৪ ০২:২৭:০৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২০-০৩-২০২৪ ০২:২৭:০৪ অপরাহ্ন
জাহাজের ক্যাপ্টেন ও জলদস্যুর সঙ্গে যোগাযোগ ফাইল ছবি
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন ও এক জলদস্যুর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের কথা জানিয়েছে সরকার।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম বুধবার বলেছেন, জিম্মি জাহাজের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। পাশাপাশি জাহাজে থাকা জলদস্যুর এক সদস্যের সঙ্গেও প্রাথমিক যোগাযোগ হয়েছে।

তিনি বলেন, জলদস্যুরা জাহাজে থাকা ক্যাপ্টেনকে দেশে যোগাযোগ করার অনুমতি দিয়েছে। জলদস্যুরা নাবিকদের সাথে খারাপ আচরণ করেনি। জাহাজে খাবার যথেষ্ট রয়েছে বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তবে জাহাজের মালিক পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের সাথে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হলেও, এখনো জলদস্যুদের সাথে কোনো যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা বোঝাই করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে উদ্দেশ্যে রওনা হয় চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী কবির গ্রুপের জাহাজটি। পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে।

মোগাদিসু থেকে এক হাজার ১১১ কিলোমিটার পূর্বে ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই করে বাণিজ্যিক কার্গো জাহাজটিকে প্রথমে নেয়া হয় সোমালিয়ার গারাকাড এলাকায়। উপকূল থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দুরে নোঙর ফেলা হয়।

এর পর আবার অবস্থান বদলে আবদুল্লাহকে নেয়া হয় গদবজিরান উপকূল এলাকায়। এবার নোঙর ফেলা হয় উপকূলের আরো কাছে, মাত্র সাড়ে ৭ কিলোমিটার দূরে। এরপর আর এগিয়ে উপকূলের পৌনে তিন কিলোমিটার দূরত্বে নেয়া হয়েছে।

জাহাজের ২৩ নাবিক ও ক্রুদের নিয়ে বারবার অবস্থান বদলাতে থাকায় সন্দেহ বাড়তে থাকে। এরি মধ্যে খবর আসে, জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও অপহৃত নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

বাণিজ্যিক জাহাজটি দস্যুদের কবলমুক্ত করতে সোমালি পুলিশ ও আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও এক প্রতিবেদন জানায় রয়টার্স।

    এমভি আবদুল্লাহয় অভিযানের 'প্রস্তুতি' এমভি আবদুল্লাহয় অভিযানের 'প্রস্তুতি'

তবে বাংলাদেশের অনুমতি ছাড়া কোনো দেশ চাইলে জাহাজে অভিযান চালাতে পারবে না বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাকসুদ আলম।

তিনি বলেন, ভারতসহ ইউএন অনুমোদিত বিভিন্ন দেশের যুদ্ধ জাহাজ নিরাপত্তার জন্য এই রুটে টহল দেয়। কিন্তু কোনো দেশের জাহাজকেই জলদস্যুর হাতে জিমি হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ উদ্ধারের অনুমতি দেয়া হয়নি। কিংবা কোন দেশও উদ্ধারের জন্য বাংলাদেশের কাছে অনুমতি চায়নি।

'যেহেতু জাহাজটিতে ২৩ জন নাবিকই বাংলাদেশি, কাজেই অন্য কোনো দেশের অভিযান চালাতে হলে বাংলাদেশের অনুমতি নিতে হবে,' যোগ করেন তিনি।


এদিকে অপহৃত নাবিকদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গত শনিবারের পর থেকে নাবিকদের সাথে পরিবারের সদস্যদের কোনো যোগাযোগ হয়নি।

কবির গ্রুপের মিডিয়া ফোকাল পার্সন মিজানুল ইসলাম একাত্তরকে বলেন, প্রতিদিনই ন জলদস্যু কবলিত জাহাজের নাবিক-ক্রুদের সাথে কথা হচ্ছে। বুধবার সকালেও যোগাযোগ হয়েছে।

'নাবিকরা সুস্থ আছেন। তাদেরকে মানসিকভাবে শক্ত থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে,' বলেন তিনি।

তবে জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- কোনো অভিযান পরিচালনা হলে তা জাহাজে থাকা নাবিকদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।

এদিকে জাহাজটি কয়লাবাহী হওয়ায় আগুনের স্পার্কের কারণে বিস্ফোরণের ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা।

    উপকূলের আরো কাছে আবদুল্লাহ উপকূলের আরো কাছে আবদুল্লাহ

তারা বলছেন, এ ধরনের জাহাজে মিথেন গ্যাসসহ কিছু দাহ্য গ্যাস তৈরি হওয়ায় নিয়মিত অক্সিজেন, মিথেন ও কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের পরিমাপ করতে হয়। জাহাজের অভ্যন্তরে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে গেলে এবং আগুনের স্পর্শ পেলে তা জাহাজে বিস্ফোরণের ঝুঁকি তৈরি করবে।

আর এসব কারণেই অভিযানের বিরোধিতা করছে প্রাক্তন জাহাজের ক্যাপ্টেন ও বাংলাদেশ মেরিনার্স অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা।

এদিকে শনিবার স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করতে দিয়ে নাবিকদের তাদের পরিবারের সাথে কথা বলতে জলদস্যুরা সুযোগ করে দিলেও; এরপর থেকে পরিবারের সাথে সব যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে জানান জাহাজের চিফ অফিসার আতিক উল্লাহ খানের ভাই আসিফ খান।
71/tv

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ